Breaking News
recent

ধর্ষণের আগে নামাজ পড়ানো হতো

মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বন্দীদশা থেকে পালিয়ে আসা এক নারী জানিয়েছেন, তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা, শত শত নারীর সঙ্গে আটক রাখা এবং দীর্ঘদিন ধরে তার ওপর চালানো নির্যাতনের বিবরণ। তিন বছর আগে সেই বন্দীদশা থেকে বেঁচে ফেরা ইরাকি নারী নাদিয়া মুরাদ বর্তমানে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন।

‘দ্য লাস্ট গার্ল’ নামে নিজের লেখা এক বইতে মুরাদ জানিয়েছেন তার দুঃসহ সেই অভিজ্ঞতার কথা।

নাদিয়া মুরাদ জানান, ২০১৪ সালে গোটা উত্তর ইরাক আইএসের দখলে চলে যায়। দখলকৃত ওই এলাকায় ছিলেন ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লোকেরা। আর সেখানকার কোচো নামের ছোট্ট একটি গ্রামে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন নাদিয়া। পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতেন তিনি।
আর সে গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই ছিলেন অসচ্ছল। ২০১৪ সালে ওই এলাকায় পৌঁছে যায় আইএস সদস্যরা। বুড়ো-যুবক-বাচ্চাদেরকে নারীদের থেকে আলাদা করে গ্রামেরই একটা স্কুলে ঢোকানো হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই গুলি করে মেরে ফেলা হয় তাদের। ওই ঘটনায় নিহত হয় নাদিয়ার ছয় ভাইও। 

এরপর অন্য নারীদের সঙ্গে নাদিয়া মুরাদকে একটি বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় মসুল শহরে। সেখানে নিয়ে অল্পবয়সী নারীদের সঙ্গে তাকেও যৌনদাসী হিসাবে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। অনেক ইয়াজিদি নারী সম্ভ্রম বাঁচাতে সুযোগ বুঝে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। নাদিয়া জানান, এক লোক এসে তার পেটে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে পরে তাকে কিনে নেন।

নাদিয়া মুরাদ বলেন, মসুলে ২০ লাখ মানুষের বাস। সেখানে অন্তত দুই হাজার মেয়েকে আটকে রাখা হয়েছিল। বন্দী অবস্থায় ইউরোপ, সৌদি আরব, তিউনিশিয়া থেকে একের পর এক আইএস সদস্য এসে ধর্ষণ করতো তাকে। ধর্ষণের আগে তাকে অন্য বন্দী নারীদের মতো নামাজও পড়িয়ে নেওয়া হতো।

মুরাদ জানান, এই নরক থেকে পালানোর চেষ্টায় ছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই সেই সুযোগও পেয়ে যান তিনি। একদিন দরজা বন্ধ না করেই বেরিয়ে যায় এক আইএস সদস্য। আর সেই সুযোগেই সোজা দৌড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। আশ্রয় নেন এক বাড়িতে। পরে ওই পরিবারের সদস্যরা তাকে মুসল থেকে পালাতে সাহায্য করেন।

পরের বছর জার্মানির শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন নাদিয়া। এখনও অনেক নারী আইএস সদস্যদের জিম্মায় রয়েছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে এখন নাদিয়া মুরাদের স্বপ্ন মেকআপ শিল্পী হিসেবে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার।
hmhridoykhan0

hmhridoykhan0

Powered by Blogger.